কোন এক প্রশান্ত বিকেলে আনমনে বসে থাকা চায়ের টং-
শহুরে ব্যস্ততার রেশ ছেড়ে চলে যাওয়া সেইসব মাটির রাস্তার কোন এক মোড়ে;
ভাবনার করিডোরে ভেসে থাকা স্বপ্নের ক্যানভাসে তখন চিত্রায়ন চলছে নতুন কাব্যের পসরা।
হাতের কাছে চিনিহীন কড়া লিকার, অন্যহাতে শূন্য কথার হিসেব-
একটা কুকুরকে দেখি ক্ষুধার্ত চোখে তাকায় রুটির দিকে, পাশেই একনিষ্ঠ পাগলের প্রলাপ;
আমার দৃষ্টিজুড়ে থরে থরে সেজে উঠে প্রাগৈতিহাসিক অতীতের বর্ণাঢ্য গল্পের মহড়া।
খুব করে নিভৃতে হারানোর বাসযোগ্য দ্বীপের একাকীত্বের গল্পে আমি ব্যাকুল আমাকে পাই,
হাটতে হাটতে পা ঝিম ধরা প্রশান্তির ভারী আতিশয্যে-
বন-বাদাড় পেরিয়ে ভয়ার্ত একলা বাড়িটি দৃষ্টিসীমায় নিবন্ধ হয়, চুপচাপ সে দিকে পা বাড়াই।
নিমেষেই সন্ধ্যার কোমল অন্ধকার আমার চক্ষু ঢেকে দেয়, একটা মিটমিটে আলো ভেসে আসে তার ভেতর থেকে,
গহীন সমুদ্রের পথহারা নাবিকের মতন সেই আলো দেখে পথ হেটে আমি পেরিয়ে যাই এক কল্পনাসম নিথর অন্ধকার।
আমার দু'পায়ে ক্রমেই ভর করে নান্দনিক দোটানার ভাবলেশহীন আর স্পর্শকাতর ভালোলাগা থেকে থেকে,
অস্পৃশ্য অভিশাপের ধোঁয়াময় আর অনড় আড়ম্বরতা জাপটে ধরে আমার দমবন্ধ ভীতির অবাঞ্চিত সব দূরাচার।
অন্ধকার ক্রমশ বাড়তে বাড়তে যা আছে তা এখন সামান্য অনুভুতি মাত্র,
আমি থেমে যাই, দেখি বিশাল ভ্রম্মান্ড থেমে গেছে আমার সেই নিকষ আবহে।
ফিরবো কি না! টের পাই লোমগুলো বিদগ্ধ পরিবেশ সায় দিয়ে সজাগ হয়,
তবুও আমি ভাবি একলা বাড়িটির কথা, সব ভয় আর সংশয় ছেড়ে নেশায় ভরাট অন্ধকার দু'চোখ;
হঠাত ঘেঁউ ঘেঁউ শব্দে স্তম্ভিত ফিরে পাই; আজানের সুর, খালি কাপ-
চেয়ে দেখি কুকুরের লেজ একটামাত্র রুটির জন্য বন্দনায় সায় দিয়ে যায় পরম বাধ্যতায় ৷
Page No 1